লোকসংগীতের অমর কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই

প্রথম প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫ সময়ঃ ১:০১ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:০১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন এই খ্যাতিমান শিল্পী।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তী গণমাধ্যমকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হলেও সম্প্রতি তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। গত ২ সেপ্টেম্বর শেষ ডায়ালাইসিসের পর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।

১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে শুরু হয় তার সংগীতযাত্রা। বাবার উৎসাহ ও পারিবারিক পরিবেশের কারণে ছোটবেলা থেকেই গানের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয় তার। শৈশবে বিভিন্ন স্থানে বেড়ে ওঠার সময় মাগুরায় ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে সংগীতের প্রথম পাঠ নেন তিনি।

তার সংগীতজীবনের মূল মাইলফলক ছিল লালন সাঁইয়ের গান। প্রথমদিকে দ্বিধাগ্রস্ত থাকলেও বাবার উৎসাহে এবং মকছেদ আলী সাঁইয়ের কাছে তালিম নিয়ে লালনের গানে পারদর্শী হয়ে ওঠেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ঢাকা রেডিওতে লালনের গান রেকর্ড করে তিনি সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবস্থান তৈরি করেন।

ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে লালনের আধ্যাত্মিক দর্শন ছড়িয়ে পড়েছিল দেশ-বিদেশে। পাশাপাশি আধুনিক গানেও তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। জাপান, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশে তিনি লালনগীতি পরিবেশন করে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ফরিদা পারভীন।

বাংলা সংগীতের ইতিহাসে তার অবদান ও লালনগীতি জনপ্রিয়করণে তার ভূমিকা চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

সর্বাধিক পঠিত

20G